রাজশাহী ব্যুরো: নাটোরের লালপুর উপজেলার ৮নং দুড়দুড়িয়া ইউনিয়নে অবস্থানরত মনিহারপুর-রামকৃষ্ণপুর(এম আর)উচ্চ বিদ্যালয়ে দীর্ঘ দিন যাবৎ শিক্ষক-কর্মচারীর সিংহভাগই অনুপস্থিত থাকে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ তুলেছেন।
বুধবার(১৫ ডিসেম্বর)সকাল সাড়ে ১০ টা থেকে ১১ টা পর্যন্ত এম আর হাইস্কুল মাঠ প্রাঙ্গণ সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, মাত্র ৭/৮ জন শিক্ষক স্কুল মাঠে চেয়ার নিয়ে বসে শীতের মিষ্টি রোদ পোহাচ্ছে, এমতাবস্থায় জাতীয় দৈনিক আশ্রয় প্রতিদিন ও দৈনিক সময়ের দাবী পত্রিকার সংবাদ কর্মীরা অত্র হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষকের সাথে সাক্ষাৎ করতে চাইলে তাকে অনুপস্থিত পাওয়া যায়, পরে রোদে বসা সহকারী শিক্ষকদের সাথে সাংবাদিকদের আলাপ চলাকালীন সময়ে ১১ টার পরে উক্ত হাইস্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক লুৎফর রহমান দ্রুত গতিতে স্কুলে প্রবেশ করেন।
এ সময় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক লুৎফর রহমানের সাথে কথা বলার ফাঁকে অফিস কক্ষে বসে থাকা করণীক মহাসীন আলী শিক্ষকদের হাজিরা খাতা টেবিলের ড্রয়ারে রেখে তালা দিয়ে কৌশলে অফিসের বাহিরে চলে যায়।
এরপর ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কে, প্রধান শিক্ষক কোথায় জানতে চাইলে বলেন তিনি অসুস্থ,আপনি এখন অফিসে আসছেন কেন? তিনি বলেন চা খাইতে গিয়ে দেরি,আপনাদের স্টাফ কতজন?তিনি বলেন শিক্ষক-কর্মচারী মিলে২৮ জন,এখন আছেন কতজন?বলেন ২ জন বাদে সবাই উপস্থিত আছেন।
এ সময় স্থানীয়রা বলেন মিথ্যা বলেন কেন এখনে তো মাত্র ১০/১২ জন কে দেখছি আর গুলো সবাই কই?তখনই যেন উপস্থিত শিক্ষকদের মাথায় হাত!
এরপর শুরু হয় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক লুৎফর রহমানের তালবাহানার অভিনয়।
তিনি পূর্বের সকল কথা এড়িয়ে যেতে চান এবং বলেন আজ পরীক্ষা চলছে কিছু শিক্ষক ওখানে ডিউটিতে আছে,কি পরিক্ষা আর বলতে পারছেনা,কয়কজন শিক্ষক গেছে? এ প্রশ্নের জবাবে কখনো ৩ কখনো ৪ আবার কখনো ৭ জন গেছে বলছে এ যেন তার ছলচাতুরী ছাড়া কিছুই না।
অপর দিকে কয়েকজন সহকারী শিক্ষক লুৎফর রহমানের পক্ষে জবাব দিচ্ছে মনে হচ্ছে তারাই বুঝি ঐ প্রতিষ্ঠানের প্রধান।
এ বিষয়ে ইদবার আলী ও রইজুল ইসলাম নামের দুই স্থানীয় ব্যাক্তি বলেন,এই স্কুলে অনিয়মের ছড়াছড়ি,গত বছর করোনা কালীন সময় থেকে আদ্যবধী কোন শিক্ষক ঠিকমত স্কুলে আসেনা,কেউ সাড়ে ১০ টায়,১১ টায়,এমনকি ১২ টার সময়ও শিক্ষককে স্কুলে আসতে দেখা যায়,তারা আসে স্কুলের হাজিরা খাতা সই করে আবার তখনই চলে যেতে দেখা যায়।খোঁজ খবর নিলে দেখা বিভিন্ন বাজার ঘাটে স্কুল চলাকালীন সময়ে স্কুল বাদ দিয়ে চা,পান,সিগারেট ও টাচ ফোনের গেম খেলতে ব্যাস্ত থাকে।
তারা আরও বলেন,এই সব অনিয়মের মধ্যেও নাকি স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি গঠন করবে ঘরোয়া ভাবে অর্থাৎ যাকে পকেট কমিটি বলে।
তাদের দাবি,স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি করবে তাতে কোন বাধা নিষেধ নেই কিন্তু পকেট কমিটি যেন না হয়,সকল ছাত্র অভিভাবকদের নিয়ে ভোটের মাধ্যমে ম্যানেজিং কমিটি গঠন করা হোক।
রবিউল নামের এক ব্যাক্তি বলেন অত্র স্কুলের সহকারী শিক্ষক মান্নান ও মামুন তো স্কুলেই আসেনা,কিন্তু বেতন তো ঠিকই পায় শুনি,তারা তো তাদের ব্যাক্তি গত কাজ ও ব্যাবসা নিয়ে ব্যাস্ত থাকার কারনে স্কুলের কথা ভুলেই গিয়েছে।
উক্ত বিষয়টি লালপুর উপজেলার নির্বাহী অফিসার উম্মুল বানীন দ্যুতিকে মুঠোফোনে অবগত করলে তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলে জানান।
সর্বশেষে স্থানীয় জনগন মনিহারপুর-রামকৃষ্ণপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের এমন অনিয়মের প্রতিকার এবং প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট স্মারক লিপি প্রদান করবেন বলেও জানিয়েছেন।