বিশেষ প্রতিনিধি:
সাতক্ষীরার কর্তব্যরত পাঁচ সাংবাদিকের নামে মিথ্যা হয়রানিমূলক চাঁদাবাজি মামলার ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ) ।
শুক্রবার (২৮ এপ্রিল) সন্ধ্যায় তত্ত্বাবধায়ক সরকার সাবেক উপদেষ্টা, কবি সুফিয়া কামালের কন্যা ও মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ) এর সভাপতি অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে নিন্দা ও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তিনি বলেন, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার তৈরি ও বিএসটিআই নিবন্ধন ব্যবহার করে সেমাই বাজারজাত করা নিয়ে সংবাদ পরিবেশনের জেরে সাতক্ষীরায় স্থানীয় পাঁচ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা হওয়ায় মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ) এর তীব্র নিন্দা, ক্ষোভ ও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে পাশাপাশি অনতিবিলম্বে মামলাটি প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছে।
তিনি বলেন , সাতক্ষীরায় প্রবাসীকে নিয়ে নানা গুঞ্জন-কোটি টাকার ব্যবসা পরিচালনা করেন ইমুতে, দেখান না চেহারা” শীর্ষক সংবাদটি ২৭ মার্চ, প্রকাশের পর ২৯ মার্চ জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় শপিং ভ্যালি লাচ্ছা সেমাই ফ্যাক্টরিতে অভিযান চালিয়ে ২৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড আদায় করা হয়। জরিমানা দেয়া প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, বিএসটিআই লাইসেন্স না থাকার শর্তেও সেমাইয়ের প্যাকেটের গায়ে বিএসটিআই লোগো ও ভুয়া নিবন্ধন নম্বর ব্যবহার করার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনায় নেতৃত্ব দেন, র্যাব-৬ সাতক্ষীরার কোম্পানি কমান্ডার মেজর জে এম গালিব, এ সময় উপস্থিত ছিলেন নির্বাহি ম্যাজিস্ট্রেট ও এনডিসি জনাব বাপ্পি দত্ত রনি।
তিনি আরো বলেন এর জেরে অনলাইন পোর্টাল ঢাকা পোস্টের জেলা প্রতিনিধি সাংবাদিক সোহাগ হোসেন, ঢাকা মেইলের জেলা প্রতিনিধি গাজী ফারহাদ, দৈনিক পত্রদূত ও এ জেড নিউজের সাংবাদিক হোসেন আলী, দৈনিক মুক্ত খবরের সাংবাদিক হাবিবুর রহমান ও দৈনিক কালের চিত্রের সাংবাদিক শাহীন বিশ্বাসের বিরুদ্ধে শপিং ভ্যালি ফুড প্রোডাক্টসের ব্যবস্থাপক জহর আলী সরদারের কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি এবং বাদীকে মারধর করে ৬০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ এনে আদালতে মামলা করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে তদন্ত করে আগামী ২৩ মের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
সুলতানা কামাল বলেন, মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশান (এমএসএফ) মনে করে সাংবাদিকেরা পেশাগত দায়িত্ব পালন করে দেশের জনগনকে ও সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে তথ্য সরবরাহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। জনগণের বক্তব্য ও প্রয়োজনীয়তাসমূহ এবং সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের কার্যকারিতা সম্পর্কে নীতিনির্ধারকদের অবহিত করছে। এমএসএফ আরো মনে করে হয়রানিমূলক মামলা দিয়ে গণমাধ্যম কর্মীদের কন্ঠরোধ করার অপচেষ্টা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না, যা শুধু মাত্র দু:খজনকই নয়, বরং সংবাদপত্র ও সাংবাদিকের স্বাধীনতারও পরিপন্থি। সাংবাদিকরা যাতে নির্বিঘ্নে তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে পারে এমন পরিবেশ তৈরি করা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা,গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় গণমাধ্যমের প্রত্যাশিত ভূমিকা এবং সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ঘটনাসমূহের প্রভাব বিবেচনায় সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহার করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে এমএসএফ জোর দাবী জানাচ্ছে।