স্টাফ রিপোর্টার: সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনি উপজেলার শ্রীউলা ইউনিয়নে মাড়িয়ালা গ্রামের এক পরিবারের তিনজন সদস্য (দুই ছেলে এবং এক মেয়ে) শারীরিক এবং মানষিক প্রতিবন্ধী যদিও তারা জন্মগত এরকম ছিলেন না।তাদের দিনগুলো খুবই কষ্টে যায়। তাসলিমা নামে যে মেয়েটি প্রতিবন্ধী তার আগে বিয়ে হয়েছিল। ভাল থাকা অবস্থায় শেষের জামাই তাকে ছেড়ে চলে যায়। বাবার বাড়ি থেকে নদীতে জাল টানা, দিনমজুরের কাজ -সবই করত। এখন অবস্থা এমন হয়েছে যে গালে তুলে খাওয়াতে হয়। দিগম্বর হয়ে ঘুরে বেড়ায়।
আরেক ছেলে প্রতিবন্ধী হাবিবুল্লাহও আগে ভাল ছিল। অন্যের ঘেরে থাকত। ধান কাটত। এরকম প্রতিবন্ধী হয়ে পড়লে তার স্ত্রী আর মেয়ে বাপের বাড়ি চলে যায়। এখন এক চোখেও দেখেন না হাবিবুল্লাহ।
ছোট ছেলে খায়রুল্লাহ। গোপালগঞ্জে পাথর বহন করতে গিয়ে ঠোঁটে পাথর পড়ে রক্তে রঞ্জিত হয়ে যায়। আস্তে আস্তে ঘা, তারপরে মানসিক প্রতিবন্ধী। এখন সারাক্ষণ শুয়ে থাকে। কাগজ খাওয়া তার অভ্যাসে পরিনত হয়েছে।
বৃদ্ধ পিতামাতা প্রতিবন্ধী তিন সন্তানকে নিয়ে নিদারুন কষ্টে আছেন। প্রতিবন্ধী সন্তানরা সারাদিন খুপড়ি ঘরের স্যাঁতসেঁতে মেঝেতে শুয়ে থাকে। সাথে রয়েছে খাবার কষ্ট। রাতে মশারী বিহীন থাকতে হয় তাদের। এক এক জন এক এক অবস্থায় পড়ে থাকে ঘরের মেঝেতে। মশা নিধনের গ্লোব জ্বালিয়ে রাত পার করে দেয় তারা।
এই নিদারুণ পরিস্থিতি নাড়া দিয়েছে অনেক মানবিক ব্যক্তির মহৎ হৃদয়কে। তারই অংশ হিসেবে আমার ফেসবুক পোস্ট দেখে অত্র এলাকার একজন প্রবাসী ভাই তাদের জন্য খাদ্যসামগ্রী প্রদান করার লক্ষে নগদ টাকা প্রেরণ করেছেন। সেই টাকা দিয়ে তাদের জন্য একমাসের খাদ্যসামগ্রী (চাউল,ডাউল,আলু,
পেয়াজ,তেল,সেমাই, চিনি,চিড়া) কিনে দিয়েছি এবং বাকি টাকা পারিবারিক অন্যান্য খরচ মেটানোর জন্য প্রদান করা হয়েছে। যেখানেই এই ধরনের নিদারুণ দৃশ্য চোখে পড়ে, সেখানেই এই মহৎ মানুষ গুলোর হৃদয় প্রকম্পিত হয়। অন্তরের অন্তস্তল থেকে তাদের প্রতি রইলো আন্তরিক ভালবাসা এবং কৃতজ্ঞতা।