বিশেষ প্রতিনিধি: দেবহাটার রুপসী ম্যানগ্রোভ পিকনিক স্পটটি প্রশাসনের নির্দেশনায় দীর্ঘদিন পরে বিনোদন প্রেমীদের জন্য খুলে দেয়া হলো। মহামারী করোনা ভাইসরাসের ২য় ধাপের কারনে সরকারী নির্দেশনার আলোকে লকডাউনের পাশাপাশি বন্ধ রাখা হয় এই আকর্ষনীয় বিনোদন কেন্দ্রটি। দীর্ঘ লকডাউন শেষে ১৯ আগষ্ট, ২০২১ ইং বৃহষ্পতিবার থেকে আবারো সকল পর্যটক ও বিনোদন প্রেমীদের জন্য কুলে দেয়া হয়েছে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত ঘেষা ইছামতির নদীর বুকে অবস্থিত এই বিনোদন কেন্দ্রটি।
ইতিমধ্যে অন্যতম একটি বিনোদন কেন্দ্র রুপে রুপ ধারন করেছে এই রুপসী ম্যানগ্রোভ পয়টন কেন্দ্রটি। তবে গত যশ ঝড়ের কারনে এই বিনোদন কেন্দ্রটি অনেক ক্সতিগ্রস্থ হয়েছে। এখানের অনেক ট্রেইল ভেঙ্গে গেছে এবং অনেক সৌন্দর্য বর্ধন করা অনেক কিছু ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
তবে দেবহাটা সাতক্ষীরা জেলা প্রশানসক হুমায়ন কবীরের নির্দেশনায় দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাছলিমা আক্তার রুপসী ম্যানগ্রোভরে রুপ ফিরিয়ে আনতে ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছেন। কেন্দ্রটিকে আরো নান্দনিক ও নয়নাভিরাম করে একটি সৌন্দর্যপূর্নভাবে মানুষের চিত্ত বিনোদনের জন্য গড়ে তুলতে ইতিমধ্যে নির্মান করা ট্রেইল ও দিঘীতে প্যাডেল বোর্ড দেয়া, পাকা বেঞ্চ নির্মান, গাড়ী গ্যারেজ, উপজেলা সদর থেকে রুপসী ম্যানগ্রোভ পর্যন্ত পিচের রাস্তা নির্মানসহ বিভিন্ন ক্ষতি হওয়া সকল কিছুর কাজ করা হচ্ছে এবং আরো সুন্দর করার জন্য ম্যানগ্রোভের মধ্যে রাস্তা নির্মান, একটি কফি হাউজ নির্মান করাসহ বিভিন্ন কাজ চলমান রয়েছে।
ভারত-বাংলাদেশ বিভাজনকারী ইছামতি নদীর কুল ঘেষে দেবহাটা উপজেলার শীবনগর গ্রামে গত কয়েক বছর আগে মানুষের চিত্ত বিনোদনের লক্ষ্যে দেবহাটা উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সুন্দরবনের আদলে গড়ে তোলা হয় “রুপসী ম্যানেগ্রাভ” বিনোদন কেন্দ্র। তৎকালীন সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক ড. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এই “রুপসী দেবহাটা ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট” উদ্বোধন করেন।
এখানে সুন্দরবন থেকে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ এনে রোপন করা হয়, খনন করা হয় একটি দিঘী, তৈরী করা হয় একটি রেস্ট হাউজ। সেসময় থেকে এখানে দুর দুরান্ত থেকে সাধারন মানুষ সহ প্রশাসনের বড় বড় কর্মকর্তারা আসেন কিছুটা শান্তির পরশ নিতে। এখানে আসেন প্রধানমন্ত্রীর কার্য্যালয়ের তৎকালীন মহাপরিচালক (প্রশাসন) কবির বিন আনোয়ার। তিনি জায়গাটিতে এসে মুদ্ধ হন এবং উন্নয়নের সবধরনের আশ্বাস প্রদান করেন।
এখানে সুন্দরবন থেকে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ এনে রোপন করা হয়, খনন করা হয় একটি দিঘী, তৈরী করা হয় একটি রেস্ট হাউজ। বিভিন্ন ছুটির দিনে দর্শনার্থী ও ভ্রমণ পিপাসুদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে অপরূপ সৌন্দর্যের তীর্থভূমি রূপসী দেবহাটার ম্যানগ্রোভ পর্যটন কেন্দ্রটি। বিভিন্ন প্রজাতির গাছ আর সবুজের সমারোহে সুন্দরবনের আদলে গড়ে ওঠা ম্যানগ্রোভ বনটির অপরূপ সৌন্দর্যের নান্দনিক মুহূর্তগুলোকে ধরে রাখতে কেউ কেউ পরিবার পরিজনদের নিয়ে আবার কেউবা মেতে উঠতেন সেলফিতে।
পাশাপাশি কৃত্রিম সব জীবজন্তু, খেলনা সামগ্রীসহ নয়নাভিরাম সৌন্দর্যমন্ডিত এ পর্যটন কেন্দ্রটিতে পরিবারের সাথে আনন্দে মেতে ওঠে শিশুরাও। উল্লেখ্য, রুপসী দেবহাটা ম্যানগ্রোভ পর্যটন কেন্দ্রটি দেবহাটা উপজেলার শিবনগর মৌজার ১ নং খতিয়ানের ৩৯৮ নং দাগের ইছামতি নদীর তীরে জেগে ওঠা চরভূমি।
যার আয়তন ৩১.৪৬ একর (০৭ একর পুকুরসহ)। তবে এই জায়গা আরো বাড়ানোর উগ্যোগ গ্রহন করা হয়েছে বলে জানা গেছে। দেবহাটা উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে গড়ে ওঠা ম্যানগ্রোভ বন সাতক্ষীরা জেলার বর্তমানে একটি উল্লেখযোগ্য পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।