আশাশুনি প্রতিনিধি: টানা ১৮ মাস পর ক্লাসে ফিরেছে আশাশুনি উপজেলার স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলায় আগের মত আনন্দ উল্লাসে মুখরিত হয়ে উঠেছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো। রোববার সকালে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকরা উৎসব মুখর পরিবেশ ও আমেজে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে হাজির হন। এসময় অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রধান শিক্ষকসহ শিক্ষকবৃন্দ শিক্ষার্থীদের ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। এরপর শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্লাস রুমের ভেতরে প্রবেশ করানো হয়।
অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সাবান দিয়ে হাত ধোয়ানো হয় এবং মাস্ক বিতরণ করা হয় শিক্ষার্থীদের। এছাড়াও প্রতিটি ক্লাসে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বসানো হয় তাদের। প্রত্যেকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ছিল লক্ষ্যণীয়। তবে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের হারও চোখে পড়ার মত। করোনা মহামারির কারণে দীর্ঘ বিরতির অবসান ঘটিয়ে ৫৪৪ দিন পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলাকে স্বাগত জানিয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। অপেক্ষার পালা শেষে প্রাণহীন শিক্ষাঙ্গনে আবার প্রাণের ছোঁয়া দিয়েছেন তারা।
দীর্ঘদিন পর স্ব-শরীরে ক্লাসে বসার আনন্দ দেখা যায় শিক্ষার্থীদের চোখে-মুখে। কর্তৃপক্ষও সম-উচ্ছ্বাসে তাদের বরণ করেছে। উপজেলার অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসছে সারিবদ্ধভাবে। স্কুলের প্রধান গেট থেকে ভিতরে প্রবেশ করতেই দেখা যায়, বেলুন, জরি কাগজ দিয়ে আরো একটি সুসজ্জিত গেট। সেখানে দাঁড়িয়ে একজন শিক্ষক তাপ মাপক যন্ত্র দিয়ে শিক্ষার্থীদের তাপমাত্রা পর্যবেক্ষণ করছেন। প্রধান ফটকের গায়ে সাঁটানো হয়েছে স্বাস্থ্যবিধি সম্বলিত ব্যানার।
বেলুনের গেট পেরিয়ে ভিতরে দেখা যায়, স্কুলের শিক্ষার্থীদের ফুলেল শুভেচ্ছায় বরণ করে নিচ্ছেন শিক্ষকরা। আরও একটু সামনে অগ্রসর হলে দেখা যায়, শিক্ষার্থীদের হাত ধৌত করার প্রয়োজনীয় উপকরণ। সেখান থেকে হাত ধুয়ে ক্লাস রুমে প্রবেশ করছে শিক্ষার্থীরা। ১৮ মাস পর ক্লাস রুমে এদিন শিক্ষকরা বিনোদনমূলক কার্যক্রম ও পাঠ্যসূচি নিয়ে আলোচনা করেন। অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকরা জানান, স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রথম দিনেই কাম্য সংখ্যক শিক্ষার্থী হাজির হয়েছে। সরকারের দেওয়া শর্ত মেনেই শিক্ষার্থীদের ক্লাসে নেওয়া হয়েছে।
প্রথম দিনটি অত্যন্ত আনন্দময় পরিবেশে উপভোগ করেছে শিক্ষার্থীরা। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলায় শিক্ষক ও অভিভাবকদের মাঝেও ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে। তবে একই সঙ্গে করোনার সংক্রমণ ফের বাড়ার শঙ্কায় তাদের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠাও রয়েছে। অন্যদিকে, এদিন সরকারি স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে কি-না, সেটি উপজেলা শিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তাদের তদারকি করতে দেখাগেছে।