বিশেষ প্রতিনিধি: ছোট দোকান চালিয়ে ভালোই চলছিল শওকত আলীর সংসার। করোনার কারণে ছোট ব্যবসাটিও বন্ধ হয়ে যায়। তাই বাধ্য হয়ে কয়েক মাস ধরে মোটরসাইকেলে রাইড শেয়ার করে সংসার চালাচ্ছিলেন তিনি।
আজ সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মোটরসাইকেল নিয়ে বাড্ডা লিংক রোডে যাত্রীর অপেক্ষায় ছিলেন শওকত আলী। এ সময় ট্রাফিক সার্জেন্ট এসে তাঁর কাগজপত্র নিয়ে যান। মামলা না দিতে অনুরোধ করে পুলিশের কাছে গাড়ির কাগজপত্র ফেরত চান তিনি। কাগজপত্র ফেরত না পেয়ে হতাশ হয়ে মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেন।
পুলিশের দাবি, কাগজপত্র নিলেও শওকত আলীর মোটরসাইকেলের বিরুদ্ধে কোনো মামলা দেয়নি পুলিশ। মামলা দেওয়ার আগেই তিনি গাড়িতে আগুন দিয়েছেন।
গুলশান ট্রাফিক বিভাগের উপকমিশনার রবিউল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘অফিস আওয়ারে গুলশানের লিংক রোডে যানজট হয়। মোটরসাইকেলগুলো রাস্তার পাশে এমনভাবে দাঁড় করিয়ে রাখে, এতে গাড়ি চলাচলে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়। তাই দায়িত্বরত পুলিশ সার্জেন্ট মোটরসাইকেল চালকদের কাগজপত্র নেন।
কয়েক জন কে মামলা দেওয়া হলেও শওকত আলীর মোটরসাইকেলের বিরুদ্ধে কোনো মামলা দেওয়া হয়নি। মামলা দেওয়ার আগেই তিনি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন।’
বাড্ডা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘শওকত আলীকে থানায় এনে ঘটনা সম্পর্কে জানার চেষ্টা করছি। তিনি আমাকে জানিয়েছে, আগেও কয়েকটি মামলা হয়েছে তাঁর গাড়ির বিরুদ্ধে। আজ যখন পুলিশ তাঁর কাগজপত্র নিয়েছে, তখন তিনি হতাশা ও আবেগ থেকে গাড়িতে আগুন দিয়েছেন।’
শওকত আলীর বরাত দিয়ে ওসি বলেন, ছোট ব্যবসা ছিল তাঁর। করোনার কারণে ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেছে। দু–তিনমাস ধরে মোটরসাইকেল চালাচ্ছিলেন তিনি।
এদিকে, শওকত আলীর মোটরসাইকেলে আগুন দেওয়ার ভিডিওটি ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এ ঘটনা দুঃখজনক বলেছেন অনেকেই।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওর নিচে মো. মিজান নামের এক ব্যক্তি লিখেছেন, বাস্তবতার করুণ চিত্র। মুকিমুল আহসান হিমেল নামের আরেকজন লিখেছেন, কতটা অসহায় হলে মানুষ এটা করতে পারে।
শওকত আলী থানা হেফাজতে থাকায় তাঁর বক্তব্য নেওয়া যায়নি।