আশাশুনি প্রতিনিধি: আশাশুনি উপজেলার কুল্যা ইউনিয়নের কচুয়া গ্রামের গ্রাম ডাক্তার আনিছুর রহমান গত ৪৭ বছর ধরে তার নিজ খরচে বিভিন্নস্থানে গাছ লাগিয়ে উজ্জল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। গত সোমবার ও তিনি সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং বাঁকাল এতিমখানায় বিভিন্ন প্রজাতির গাছ লাগান। তথ্যানুসন্ধানে জানাগেছে, কচুয়া গ্রামের মৃত আবু জাফর সরদারের ছেলে বৃক্ষপ্রেমী আনিছুর রহমান ১৯৪৭ সালের ১৩ এপ্রিল জন্মগ্রহন করেন। এরপর তিনি বড় হয়ে তার পেশা গ্রাম্য ডাক্তারীর মধ্যে দিয়ে তিনি মানব সেবায় আত্মনিয়োগ করার পাশাপাশি দেশের বিভিন্নস্থানে তার নিজ খরচে তিনি ফলজ, বনজ ও সৌন্দর্য্যবদ্ধনের জন্য বিভিন্ন গাছ লাগিয়ে চলেছেন। বিগত ৪৬ বছর ধরে তিনি দেশের বিভিন্নস্থানে প্রতি বছরের আষাঢ়, শ্রাবণ ও ভাদ্র এ ৩ মাসে তিনি প্রতিদিন কমপক্ষে ২টি করে গাছ বিভিন্ন হাটবাজার, সামাজিক ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চত্বরে এবং রাস্তার পাশে রোপন করেন। এছাড়াও তিনি সারা বছরের বিভিন্ন সময়ে পছন্দমত বিভিন্নস্থানে নিজ খরচে নিজ হাতে গাছ রোপন করে থাকেন। তথ্যানুসন্ধানে আরও জানাগেছে, কাদাকাটি বাজারের বিভিন্নস্থানে ছোট ও বড় যতগুলো গাছ লাগানো আছে তার অধিকাংশ বৃক্ষপ্রেমী ডাঃ আনিছুর রহমান নিজ খরচে নিজ হাতে লাগিয়েছেন। এছাড়াও তিনি বুধহাটা বাজার, নওয়াপাড়া মসজিদ, নওয়াপাড়া সীমানা পয়েন্ট, কুল্যা ইউনিয়ন পরিষদ, জামালনগর এলাকায়, খুলনার শিরোমনি এলাকায়, বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, মসজিদ, মন্দির, ঈদগাহ সহ অসংখ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সামাজিক প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন অসহায় লোকদের বাড়ির আঙ্গিনায় ও রাস্তার পাশে তিনি হাজার হাজার গাছ লাগিয়েছেন। বিভিন্নস্থানে তার লাগানো গাছের মধ্যে আম, জাম, কাঠাল, লিচু, কদবেল, আমড়া, নারিকেল, কৃষ্ণচূড়া, কদম, বকুল, শিশু, মেহগুনি, শুপারী, কেওড়া, সুন্দরী, বটগাছসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছের তথ্য পাওয়া যায়। এসব গাছ তিনি নিজ উদ্যোগে লাগিয়ে আসার পর গাছগুলো বড় হলে তা বিক্রি করে বিভিন্ন কাজে লাগিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। আর যেগুলো এখনো বিক্রয় করা হয়নি সেগুলো আজও বিভিন্নস্থানে বড় হয়ে কালের স্বাক্ষী হিসাবে দাঁড়িয়ে আছে। এলাকার সচেতন মহল বলেন, বৃক্ষপ্রেমী গ্রাম ডাক্তার আনিছুর রহমান যেভাবে এলাকায় নিজ খরচে গাছ লাগিয়ে চলেছেন সত্যি তিনি বৃক্ষপ্রেমী হিসাবে আমাদের কাছে উজ্জল দৃষ্টান্ত। এব্যাপরে জানতে চাইলে গ্রাম ডাক্তার আনিছুর রহমান জানান, আমি ডাক্তারী পেশার পাশাপাশি সমাজ ও রাষ্ট্রকে একটু অন্যভাবে সেবার করার ব্রত নিয়ে বিগত ৪৬ বছর ধরে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্নস্থানে যেখানে যে গাছ মানায় সেখানে সে গাছ রোপন করি। গাছ লাগাতে আমার অনেক ভালো লাগে, আরও ভালো লাগে যখন আমার লাগানো গাছ থেকে কেউ কোন সুফল পেতে থাকে। এসময় তিনি বর্তমান যুব সমাজকে বেশী বেশী করে গাছ লাগানোর আহবান জানান।