1. admin@dainikbangladeshtimes.com : rony :
শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:০৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম:
পাটকেলঘাটায় ভোক্তা অধিকারের অভিযানে দুই প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা আমলকি খাবেন কেন? ঝিনাইদহের শৈলকুপায় মোটরসাইকেল ধাক্কায় পথচারীর নিহত। ডিবি থেকে হারুনকে বদলি পাটকেলঘাটা বাজারে জলাবদ্ধতা সমাধানে পরিদর্শন করলেন এমপি ফিরোজ আহমেদ স্বপন “তোমার কীর্তির চেয়ে তুমি যে মহৎ” জগৎ বিখ্যাত বৈজ্ঞানিক স্যার আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের ১৬৩ তম জন্মবার্ষিকী আজ পাটকেলঘাটায় মোটরসাইকেল চোর সিন্ডিকেটের হোতাসহ আটক ৪ নগরঘাটা ইউনিয়নবাসীর পক্ষে ফিরোজ আহমেদ স্বপন ও লায়লা পারভীন সেঁজুতি এমপিকে সংবর্ধনা আশাশুনির সাংবাদিক বাহাবুল সড়ক দূর্ঘটনায় গুরুতর আহত রাসেল ভাইপারে আতঙ্কিত নয়, সচেতনতায় বেশি প্রয়োজন

ভারতে বনগাও কালিতলা পার্কিংয়ে আটকে আছে ৭ হাজার বাংলাদেশের পণ্যবাহী ট্রাক বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা জিম্মি

মোঃনজরুল ইসলাম ।।
  • প্রকাশের সময় : বুধবার, ৩ নভেম্বর, ২০২১
  • ১৯৮ বার পড়া হয়েছে

বিশেষ প্রতিনিধি: দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোলের ওপারে ভারতের বনগাঁ কালিতলা পার্কিং এ বাংলাদেশের বেনাপোল বন্দরে প্রবেশের অপেক্ষায় আমদানি পণ্য নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে প্রায় সাত হাজার ট্রাক। পণ্য বোঝাই এক একটি ট্রাক এক মাসেরও বেশি দিন ধরে পড়ে আছে পার্কিং এ।

ফলে দু’দেশের আমদানি-রফতানি বাণিজ্য এবং রাজস্ব আয়ে বড় ধরনের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। দীর্ঘদিন ধরে এই অবস্তা চললেও ভারতীয় রাজ্য বা কেন্দ্র সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো কার্যকর ভূমিকা নিতে দেখা যায়নি। এ সিন্ডিকেট ধীরে ধীরে আরো শক্তিশালী হয়ে ওঠায় এখন তারা কাউকে পাত্তা দিচ্ছে না।

স্থানীয় ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেছেন, বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত-বাংলাদেশে পণ্য আমদানি-রফতানির ক্ষেত্রে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বনগাঁ পৌরসভার মেয়রের খামখেয়ালিপনা, আমদানি-রফতানিতে নাক গলানোসহ পৌরসভার কালিতলা পার্কিং সৃষ্টি করে বিভিন্ন রাজ্য থেকে আসা ট্রাকগুলো জোর পূর্বক পেট্রাপোল বন্দরের সেন্ট্রাল ওয়্যারহাউজ কর্পোরেশনের টার্মিনালে না পাঠিয়ে পার্কিং চার্জের নামে টাকা নেওয়ার কারণে কালিতলা পার্কিংয়ে রেখে দেওয়ায় বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে দু‘দেশের মধ্যে আমদানি-রফতানি বন্ধ হওয়ার পথে। এ কারণে স্থলবন্দর বেনাপোল দিয়ে আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে বিরতা দেখা দিয়েছে। ক্রমেই আমদানি বাণিজ্য কমে রাজস্ব আদায়ে বড় ধরনের ধ্বস নামতে শুরু করেছে।

বেনাপোল কাস্টম কমিশনার মোঃ আজিজুর রহমান ভারতীয় কাস্টমস, বন্দর ও সেখানকার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে একাধিকবার বিষয়টি সমাধানের জন্য বৈঠক করলেও তা ফলপ্রশু হয়নি।

বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্টস এসোসিয়েশন বিষয়টি ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশনে একাধিকবার পত্র দিয়ে জানালেও এ ব্যাপারে কোন কার্যকরী ব্যবস্তা নেওয়া হয়নি।
সংশ্লিস্ট জানা গেছে, বেনাপোল বন্দর দিয়ে দুই দেশের পণ্য আমদানি-রফতানির ক্ষেত্রে ইচ্ছাকৃতভাবে এ ধরনের জটিলতা তৈরি করে ট্রাক থেকে প্রতিদিন আদায় করা হচ্ছে লাখ লাখ টাকার চাঁদা।

আর চাঁদার পুরো টাকাটাই পরিশোধ করতে হয় বাংলাদেশি আমদানিকারকদের। ফলে বাংলাদেশে একটি আমদানি পণ্যবোঝাই ট্রাক প্রবেশ করতে সময় লাগছে ৩০ থেকে ৩৫ দিন। আর চাঁদা আদায়ের জন্য সেখানে গড়ে উঠেছে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট। ট্রাক থেকে মোটা অংকের চাঁদা আদায় ও পণ্য প্রবেশে দীর্ঘসূত্রিতার কারণে বড়বড় আমদানিকারকরা বেনাপোল বন্দর ছেড়ে চলে গেছে অন্যত্র।

বেনাপোল বন্দর সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, এই বন্দর দিয়ে প্রতি বছর ভারতের সঙ্গে অন্তত ৩০ হাজার কোটি টাকার বাণিজ্য হয়। বছরে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ৬ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আয় করে থাকে বেনাপোল কাস্টম হাউজ। যদিও চলতি অর্থ বছরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বেনাপোল কাস্টম হাউসের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছেন ৬ হাজার কোটি টাকা।

দেশের অত্যন্ত সম্ভাবনাময় বেনাপোল বন্দর দিয়ে সাধারণত প্রতিদিন ৪৫০ থেকে ৫০০ ট্রাক পণ্য আমদানি হতো ভারত থেকে। বর্তমানে এই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে। ভারত থেকে পণ্যবাহী ট্রাকগুলি পেট্রাপোলে প্রবেশের আগে এক মাসেরও বেশি সময় আটকে রাখা হয় কালিতলা পার্কিং এ।

প্রতিটি ট্রাক থেকে ডেমারেজ বাবদ ২ হাজার টাকা করে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে প্রতিদিন। এছাড়া জরুরী পণ্য চালান আনার জন্য সিন্ডিকেটকে দিতে হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা। বনগাঁ ও পেট্রাপোল স্থলবন্দরে সিন্ডিকেট কর্তৃক অব্যবস্তাপনা এবং অনিয়মের কারণে অযৌক্তিক বিলম্ব বাংলাদেশি আমদানিকারকদের জন্য নতুন উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ব্যবসায়ীদের মতে, বেশ কয়েকটি প্রচেষ্টা সত্তে¡ও তারা সিন্ডিকেট থেকে মুক্তি পেতে পারেনি। তবে বাংলাদেশ ও ভারতীয় বন্দর কর্তৃপক্ষ প্রতিবারই বলছে তারা বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছে। ওপারের ব্যবসায়ীরা বলছেন, বিষয়টি রাজনৈতিক ইস্যু। রাজনৈতিক ভাবে দেখা না হলে এ সমস্যার সমাধান কখনও হবে না। কারণ আদায়কৃত অর্থের ভাগ চলে যায় বিভিন্ন মহলে।

ব্যবসায়ীরা জানান, সীমান্তের ওপারে বনগাঁ পৌরসভার সাবেক মেয়র শংকর আঢ্য ‘কালিতলা পার্কিং’ নামে একটি ব্যক্তিমালিকানাধীন পার্কিং তৈরি করেন। সরকারি পার্কিংয়ের চেয়ে এটি আকারে বড়। তার লোকজন মোটামুটি জোর করেই আমদানি পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলো সেখানে প্রবেশ করাতো। গত জুন মাসে বর্তমান মেয়র গোপাল শেঠ দায়িত্ব নেওয়ার পর আগের মেয়রের পথে হাটছেন তিনি।

প্রতিদিন ট্রাক প্রতি পার্কিং খরচ নেওয়া হচ্ছে ৫০০ থেকে এক হাজার টাকা করে। সিরিয়ালের নামে বনগাঁর এর অধীনে বন্দরের ভারতীয় অংশে পার্কিং সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বেনাপোল বন্দরগামী পণ্যবাহী ট্রাক ৩০ দিনেরও বেশি সময় ধরে অপেক্ষা করা হয়। ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকে আমদানিকৃত পণ্যবাহী ট্রাকগুলি পেট্রাপোলে প্রবেশের ৩০ থেকে ৩৫ দিন আগে জোর করে বনগাঁ পৌরসভার নামে তৈরি করা পার্কিংয়ে রাখা হয়, যার ফলে আমদানিকারকরা চরম ক্ষতির মুখে পড়ছেন।

পার্কিংয়ে যে কয়দিন পণ্যবাহী ট্রাক থাকবে সে কয়দিনের টাকা ভারতের রফতানিকারকরা বাংলাদেশী আমদানিকারকদের কাছ থেকে নিয়ে নিচ্ছে। ওখান থেকে প্রতিদিন নিজেদের ইচ্ছেমত কবে কোন ট্রাক বাংলাদেশে যাবে তা তারাই নির্ধারণ করে দেয়ালে কাগজ সেটে দেন। দীর্ঘ অপেক্ষার কারণে আমদানিকৃত পণ্যগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তদুপরি, শিল্পের কাঁচামাল সময়মতো কারখানায় পৌঁছাতে না পারায় শিল্প কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে মারাত্মক ভাবে।

ইন্দো-বাংলা চেম্বার অফ কমার্স সাব কমিটির পরিচালক মতিয়ার রহমান জানান, বেনাপোল বন্দর দিয়ে স্থলপথে পণ্য আমদানি করতে বেনাপোলের ওপারে ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে গড়ে উঠেছে একটি শক্তিশালী চাঁদাবাজ সিন্ডিকেট। বনগাঁ পৌরসভার মেয়রের নেতৃত্বে তার লোকজন প্রতিটি পণ্যবোঝাই ট্রাক থেকে চাঁদা আদায় করছে। পণ্যবোঝাই একটি ট্রাক ৩০ দিন ওপারে আটকে থাকলে তাকে ৬০ হাজার রুপি পরিশোধ করতে হচ্ছে। ফলে আমদানিকারকরা মোটা অঙ্কের আর্থিক লোকসানে পড়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছেন। বার বার বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশস্থ ভারতীয় হাই কমিশনসহ দু‘দেশের বিভিন্ন মহলে জানানোর পরও বিষয়টি সুরাহা হচ্ছে না।

এই সংবাদ টি সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ
আমাদের এই খানে প্রকাশিত সংবাদ সম্পুর্ন আমাদের প্রতিনিধিদের কাছ থেকে পাওয়া। কোনো প্রকার মিথ্যা নিউজ হলে কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না সম্পুর্ন দায়ী থাকবে নিউজ প্রেরণ কারী সাংবাদিক।
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: FT It
error: Content is protected !!