1. admin@dainikbangladeshtimes.com : rony :
শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:১১ অপরাহ্ন
শিরোনাম:
পাটকেলঘাটায় ভোক্তা অধিকারের অভিযানে দুই প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা আমলকি খাবেন কেন? ঝিনাইদহের শৈলকুপায় মোটরসাইকেল ধাক্কায় পথচারীর নিহত। ডিবি থেকে হারুনকে বদলি পাটকেলঘাটা বাজারে জলাবদ্ধতা সমাধানে পরিদর্শন করলেন এমপি ফিরোজ আহমেদ স্বপন “তোমার কীর্তির চেয়ে তুমি যে মহৎ” জগৎ বিখ্যাত বৈজ্ঞানিক স্যার আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের ১৬৩ তম জন্মবার্ষিকী আজ পাটকেলঘাটায় মোটরসাইকেল চোর সিন্ডিকেটের হোতাসহ আটক ৪ নগরঘাটা ইউনিয়নবাসীর পক্ষে ফিরোজ আহমেদ স্বপন ও লায়লা পারভীন সেঁজুতি এমপিকে সংবর্ধনা আশাশুনির সাংবাদিক বাহাবুল সড়ক দূর্ঘটনায় গুরুতর আহত রাসেল ভাইপারে আতঙ্কিত নয়, সচেতনতায় বেশি প্রয়োজন

প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ -বুয়েট শিক্ষকের অ্যাকাউন্টে ১০ কোটি টাকা নিয়ে প্রশ্ন

হাকিকুল ইসলাম খোকন ।।
  • প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২১
  • ১০৯ বার পড়া হয়েছে

সিনিয়র প্রতিনিধি: ৬ বছরে বুয়েটের একজন শিক্ষকের অ্যাকাউন্টে ১০ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। একজন শিক্ষকের অ্যাকাউন্টে এত টাকা কোথা থেকে এলোা? সেই অর্থের সন্ধান করতে গিয়ে গোয়েন্দারা প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে এই শিক্ষকের সম্পৃক্ততা পেয়েছেন।

এমনকি গ্রেফতারকৃত একজনের স্বীকারোক্তিতেও এসেছে ওই শিক্ষকের নাম।

রাষ্ট্রায়ত্ব পাঁচ ব্যাংকের সমন্বিত নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় যে শিক্ষকের নাম এসেছে তিনি বুয়েটের ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান নিখিল রঞ্জন ধর। গোয়েন্দা পুলিশের কাছ থেকে তার বিষয়ে জানতে পেরে বুয়েট কর্তৃপক্ষ তাকে বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিয়েছে। একই সঙ্গে ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।

বুয়েট উপাচার্য অধ্যাপক সত্য প্রসাদ মজুমদার ডয়চে ভেলেকে বলেন, “গোয়েন্দা পুলিশ আমাদের যোগাযোগ করে কিছু তথ্য দিয়েছে। সেই তথ্যের ভিত্তিতেই এই ব্যবস্থা। আমরা তদন্ত কমিটিকে পাঁচ কর্মদিবস সময় দিয়েছি। তাদের রিপোর্ট পাওয়ার পর আমরা পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব। পাশাপাশি গোয়েন্দা পুলিশকেও বিষয়টি জানাব।”

অবশ্য নিখিল রঞ্জন ধর তার বিরুদ্ধে আনা এই অভিযোগ অস্বীকার করে ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, “প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনার সঙ্গে তার কোন সম্পৃক্ততা নেই। দায়িত্ব থেকেই তিনি প্রেসে গেছেন এবং কাজটি তদারকি করেছেন।”

ছয় বছরে আপনার একাউন্টে ১০ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। গত তিন বছরে সঞ্চয়পত্র কিনেছেন ১ কোটি ৮২ লাখ টাকার। এই টাকা কোথায় পেলেন? জানতে চাইলে এই অধ্যাপক বলেন, “আমি ১৯৮৬ সাল থেকে বুয়েটে শিক্ষকতা করি। এটা সারা জীবনের সঞ্চয়। পাশাপাশি পারিবারিকভাবে মাছের ঘেরসহ কিছু ব্যবসাও আছে। সেখান থেকেও টাকা আসে। এসব টাকা দিয়েই আমি সঞ্চয়পত্র কিনেছি। সব টাকার হিসাব আছে।”

রাষ্ট্রায়ত্ব পাঁচ ব্যাংকের সমন্বিত নিয়োগ পরীক্ষার দায়িত্ব পেয়েছিল আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (এইউএসটি)। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে খণ্ডকালীন শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন অধ্যাপক নিখিল রঞ্জন ধর। গত ৬ নভেম্বর এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।

কিভাবে এই শিক্ষকের নাম প্রশ্ন ফাঁস চক্রের মধ্যে এল জানতে চাইলে ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম ডয়চে ভেলেকে বলেন, “সম্প্রতি রাষ্ট্রায়ত্ব পাঁচ ব্যাংকের সমন্বিত নিয়োগ পরীক্ষার পর প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ উঠে। তখন গোয়েন্দা পুলিশ এটা নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করে। তদন্তের এক পর্যায়ে আমরা জানতে পারি আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেস থেকেই প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে। এই ঘটনায় আমরা ১১ জনকে গ্রেফতার করি। তাদের মধ্যে একজন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়ে ওই শিক্ষকের নাম বলেছেন। পাশাপাশি আরও কিছু তথ্য আমরা পেয়েছি। এগুলো নিয়েই এখন আমাদের অনুসন্ধান চলছে। তিনি সম্পৃক্ত থাকলে আইনের আওতায় আনা হবে।”

প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়টি তদন্ত করছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গোয়েন্দা পুলিশের একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ডয়চে ভেলেকে বলেন, “অধ্যাপক নিখিল রঞ্জন ধর নিয়োগ পরীক্ষা কমিটিতে ছিলেন না। কিন্তু তিনি প্রশ্ন ছাপার দিন সকাল থেকে ভোর পর্যন্ত আহছানিয়া মিশনের ঢাকার আশুলিয়ার ছাপাখানায় অবস্থান করতেন। ফেরার সময় দুই কপি প্রশ্ন তিনি সঙ্গে আনতেন। প্রশ্ন ব্যাগে ঢুকিয়ে দিতেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পিয়ন দেলোয়ার হোসেন। গ্রেফতারের পর দেলোয়ার ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিতে এই তথ্য জানিয়েছেন।”

বুয়েটের এই শিক্ষককে কী জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে? জানতে চাইলে মামলার তদন্ত তদারক কর্মকর্তা ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার শাহাদত হোসেন সুমা ডয়চে ভেলেকে বলেন, প্রশ্নফাঁসে জড়িত থাকার অভিযোগে আমরা ১১ জনকে গ্রেফতার করেছি। এর মধ্যে কয়েকজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। বুয়েটের এই শিক্ষকের বিষয়ে বুয়েট কর্তৃপক্ষ একটা উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। তাদের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে বসব। এর মধ্যে আমরা আরও কিছু বিষয়ে অনুসন্ধান করছি। যেহেতু উনি একজন সম্মানিত শিক্ষক তাই সব তথ্য নেওয়ার পরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”

তদন্ত সংশ্লিষ্ট অপর একজন কর্মকর্তা বলেন, একজন অধ্যাপকের একাউন্টে ৬ বছরে ১০ কোটি টাকার লেনদেন অস্বাভাবিক। আমরা এই টাকা উৎস খোঁজারও চেষ্টা করছি। সবকিছু একত্রিত হলেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার মশিউর রহমান ডয়চে ভেলেকে বলেন, “বাংলাদেশ ব্যাংকের উচিত কাদের প্রশ্ন ছাপার দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে সেটা ঠিকমতো দেখা। কারণ শুধু টেন্ডারে কেউ কম টাকা দিলেই তাকে কাজ দিতে হবে, এমনটি হওয়া উচিত না। তাদের সক্ষমতা আছে কী নেই সেটাও দেখা উচিত। আহসান উল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাপাখানায় সিসি ক্যামেরাসহ ন্যূনতম নিরাপত্তাব্যবস্থাও নেই। আর সেটারই সুযোগ নিয়েছে প্রশ্নফাঁসকারীরা। ফলে তাদের কীভাবে কাজ দেওয়া হল সেটাই এখন আমাদের কাছে বিস্ময়!”

দেলোয়ারের স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে একজন কর্মকর্তা বলেন, গত ২ নভেম্বর আহছানিয়া মিশন ছাপাখানায় সমন্বিত পাঁচ ব্যাংকের প্রশ্নপত্র ছাপা হয়। সেদিন সকাল থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত নিখিল রঞ্জন ধর ওই ছাপাখানায় ছিলেন। আসার সময় প্রশ্নের দু’টি কপি তিনি নিয়ে যান। পাশাপাশি নজরদারি ও নিরাপত্তা না থাকায় দেলোয়ার নিজেও লুকিয়ে প্রশ্ন নিয়ে বের হতেন। তাকে সহযোগিতা করতেন টেকনিশিয়ান মুক্তারুজ্জামান এবং ল্যাব সহকারী পারভেজ মিয়া। এভাবে তিনি পাঁচ-ছয়বার প্রশ্ন ছাপাখানা থেকে নিয়ে এসেছেন।

এ বিষয়ে অধ্যাপক নিখিল রঞ্জন ধর বলেন, মূলত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ডাকে তিনি ছাপাখানায় যেতেন। পরীক্ষা কমিটিতে না থেকেও কেন যেতেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, মূলত পরীক্ষার সিটপ্ল্যান করতাম, অন্য শিক্ষকরাও থাকতেন। সবাই মিলে একসঙ্গে সিটপ্ল্যান তদারক করতাম। আর ছাপা প্রশ্নে কোন ভুল আছে কিনা সেটা দেখার জন্যই দুই কপি ব্যাগে আনতেন। তার কাছ থেকে এটা বাইরে যায়নি বলে দাবি তার।

এই সংবাদ টি সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ
আমাদের এই খানে প্রকাশিত সংবাদ সম্পুর্ন আমাদের প্রতিনিধিদের কাছ থেকে পাওয়া। কোনো প্রকার মিথ্যা নিউজ হলে কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না সম্পুর্ন দায়ী থাকবে নিউজ প্রেরণ কারী সাংবাদিক।
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: FT It
error: Content is protected !!