বিশেষ প্রতিনিধি: সাতক্ষীরা জেলা জুড়ে মাঝারি ও গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিতে কৃষকের কেটে রাখা ‘সোনালী ফসল পানির উপরে ভাসছে। অন্যদিকে আধা পাকা ধান মাটিতে ন্যুইয়ে পড়েছে। কৃষকের কষ্টের ফসল ধান শেষ মুহুর্তে ঘরে তুলতে হিমশিম খেতে হচ্ছে ক্ষেতের ভেজা ধান আর কৃষকের চোখের পানিতে একাকার।
ঘূর্ণিঝড়র অশনির প্রভাবে গত সোমবার সকাল ১১টা থেকে বিকাল গড়িয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হয়। আবার মঙ্গলবার (১০ মে) সকালের বৃষ্টিতে ও বুধ, বৃহস্পতি শুক্রবার রাতের বৃষ্টিতে মাঠে কেটে রাখা, কোথাও বেঁধে রাখা, কোথাও জালি দিয়ে রাখা ধানের ওপর দিয়ে পানির স্রোত বয়ে যায়।
বলছি সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার কলাপাতা গ্রাম ও এলাকার কিছু কৃষকের শপ্ন ভঙ্গের কথা। (১২মে) বুধবার পাটকেলঘাটার নেহার বিল, তৈলকুপী ডুমুর আবাদ বিল, চমরখালি বিল।
কামার আবাদ, চাঁনগাডাঙ্গী, বড়বিলা, মিঠাবাড়ী, নগরঘাটা বিলে যেয়ে দেখা যায় মাঠের কিছুকিছু যায়গায় জমি নিচু থাকায় ধান পানিতে তলিয়ে গেছে আবার কোথাও বা ভাসছে।
কলাপাতা গ্রামের কৃষাণী, কার্তিক মন্ডল এর স্ত্রী জানান আমার স্বামী হার্টের রোগী কোন কাজ করতে পারেন না। আমার দুই ছেলে এক মেয়ে নিয়ে আমাদের সংসার আমরা অন্যের জমি হাঁরি নিয়ে সাত বিঘা ধান চাষ করেছি।আশা করছিলাম ভালো ফলন পাবো কিন্তু ঘূর্ণিঝড়ের কারণে আমাদের ধান দুই ভাগ নষ্ট হয়ে গেছে এ কারণে ৪৫ থেকে ৫০ মণ ধান পেতে পারি।
আর একজন কৃষক শৈলেন্দ্রনাথ মন্ডল বলেন,আমি পাঁচ বিঘা ধান করেছি কিন্তু মাত্র ১৬কাটা জমির ধান তুলে এনেছি। আমাদের মাঠের অধিকাংশ ধান পানিতে তলিয়ে গেছে।
তিনি আরো বলেন আমাদের পশ্চিম পাশের মাঠের ধান এখনো সম্পূর্ণ রয়ে গেছে একটা ধান কাটা হয়নি।
এদিকে পাটকেলঘাটার তৈলকুপি গ্রামের কৃষক সোহরাব জানান, আমরা ৮০ভাগ ধান তুলতে পেরেছি বাকি অংশ মাঠে রয়ে গেছে।
যগীপুকুরিয়া গ্রামের কৃষক কবীর সরদার জানান ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে আমিসহ এলাকার অনেক কৃষক আধা পাকা ধান নষ্ট হওয়ার ভয়ে কেটে ঘরে উঠানোর চেষ্টা করছি কিন্তু সব চেষ্টা ব্যর্থ করে দিচ্ছে বৃষ্টি।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানান, ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাবে সোমবার থেকে শুরু হওয়া থেমে থেমে বৃষ্টিতে উপজেলার বেশকিছু এলাকায় কৃষি জমিতে কাটাধান তলিয়ে গেছে। তবে নতুন করে বৃষ্টি না হলে ক্ষতি সম্ভাবনা কম। তিনি আরো বলেন তালা উপজেলায় ৯হাজার (৫শ) হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হয়েছে। এদিকে উপজেলা কৃষি উপ-সহকারী কর্মকর্তারা বলছেন কিছু কিছু জায়গায় পানি উঠে এমন ঘটনা ঘটেছে