শ্যামল বিশ্বাস,বিশেষ প্রতিনিধি: নীলফামারীতে নিজ বাড়ীতে গৃহকর্তা যাদুকর হোসেন আলীর(৫৫) হত্যাকান্ডের জট খুলেছে। স্ত্রী সুফিয়া বেগম (৫০) তার বড় ছেলে মতিয়ার রহমানকে (২৭) সঙ্গে নিয়ে স্বামীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে।
রবিবার ১১ জুলাই বিকাল সাড়ে ৫টায় নীলফামারীর আদালতে মা ও ছেলে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দীতে অকপটে হত্যার ঘটনা তুলে ধরেন। তারা শনিবার(১০ জুলাই) ভোরে নীলফামারী শহরের মধ্য হাড়োয়া নিকুঞ্জ মহল্লার নিজবাড়িতে এ ঘটনা ঘটায়। উদ্দেশ্য ছিল বাড়ী বিক্রির টাকা আত্মসাৎ এবং বাড়ী ক্রয়কারীকে হত্যা মামলায় ফাঁসানো।
পুলিশ জানায়, সম্প্রতি প্রতিবেশী শাহিনুর আলমের কাছে সাড়ে নয় লাখ টাকায় হোসেন আলী তার বাড়িটি ও বাড়ির জমিটি বিক্রি করেন। বাড়ী এবং জমির ক্রেতা টাকা বুঝে দিলেও বাড়িটি রেজিস্ট্রি হয়নি এখনো। ক্রেতা শাহিনুর আলমকে ওই বাড়ি ছেড়ে দেওয়ার কথা ছিল শনিবার (১০ জুলাই)। ক্রেতাকে ওই বাড়ি ছেড়ে না দিয়ে তার ৯ লাখ টাকা আত্মসাতের লক্ষ্যে হোসেন আলীর স্ত্রী সুফিয়া বেগম, বড় ছেলে মতিয়ার রহমান পরিকল্পনা করে শুক্রবার(৯ জুলাই) রাত সাড়ে তিনটার দিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হোসেন আলীর বাম হাতের কনুই কেটে দিয়ে ঘরের বারান্দায় ফেলে রাখেন। এরপর রক্তক্ষরণে হোসেন আলীর মৃত্যু হয়। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর দূর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে তার মৃত্যু হয়েছে বলে এলাকায় প্রচারণা চালায় তারা। এরপরে ৯৯৯ নম্বরে কল দিয়ে ঘটনাটি পুলিশকে জানায়। ওই হত্যাকান্ড ভিন্ন খাতে প্রবাহের পুরো বিষয়টির নেতৃত্ব দেন হোসেন আলীর স্ত্রী সুফিয়া বেগম। তিনি নিজেই ধারালো অস্ত্র দিয়ে স্বামীর হাত ও গলা কাটেন ।
এঘটনায় নিহতের ছোটভাই আলাল হোসেন (৪৫) বাদী হয়ে নীলফামারী সদর একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।
নীলফামারী সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাহমুদ-উন নবী বলেন, ঘটনাটি ধোয়াশা তৈরী করে রেখেছিল পরিবারের সদস্যরা। এরপর থানায় ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে রহস্য বেড়িয়ে আসে। তারা ওই বাড়ির ক্রেতাকে বঞ্চিত করে টাকা আত্মৎসাতের উদ্দেশ্যে হত্যাকান্ডটি ঘটায় বলে রবিবার বিকেলে ১৬৪ ধারায় মা ও ছেলে আদালতে জবানবন্দী প্রদান করেছে। স্বীকারোক্তি জবানবন্দী শেষে আদালত তাদের জেলা কারাগারে প্রেরণ করে।