আনোয়ারা প্রতিনিধি: প্রথম বারের মতো সারা দেশে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) রাষ্ট্রীয় ভাবে উদযাপিত হয়েছে। বিশেষ করে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পালনের সরকারি নির্দেশনা থাকলেও চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার অধিকাংশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দিবসটি পালিত হয়নি। যার ফলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর জীবনী ও কর্মের ওপর আলোচনা, বিশেষ করে ইসলামের শান্তি, প্রগতি, সৌহার্দ্য, সহিষ্ণুতা, বিশ্ব ভ্রাতৃত্ব, মানবাধিকার, নারীর মর্যাদা ইত্যাদি শিক্ষণীয় বিষয় থেকে বঞ্চিত হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, বেশিরভাগ স্কুলে হিন্দু প্রধান শিক্ষক কর্মরত থাকায় এবং উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে তদারকি না থাকায় অনেক স্কুলে দিবসটি পালন হয়নি। তাছাড়া দিবসটি প্রথম বারের মতো পালনের নির্দেশনা দেওয়ায় অনেকে গুরুত্ব দেননি বলে জানা গেছে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আনোয়ারায় ১১০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ থেকে প্রাপ্ত পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উদযাপনের নোটিশ প্রতিটি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছে। কিন্তু বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বিদ্যালয়ে না যাওয়ায় দিবসটি পালিত হয়নি।
জানা গেছে, উপজেলার শতাধিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৯০টির ও বেশি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দিবসটি পালিত হয়নি। উপজেলার নিকটবর্তী স্বরস্বতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শিলাইগড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সহ অনেক স্কুল ছিলোনা কোন আয়োজন । দুপুর দেড়টা পর্যন্ত কয়েকটি বিদ্যালয় তালাবদ্ধ দেখা গেছে।
আনোয়ারা এলাকার বাসিন্দা মো. আখলাক হোসাইন বলেন, সারা দেশে সরকারিভাবে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) জাতীয়ভাবে পালিত হচ্ছে। বিশেষ করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ উপলক্ষে পতাকা উত্তোলন ও দোয়া মাহফিল পরিচালনা করছে। কিন্তু আমাদের আনোয়ারায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে দিবসটি পালিত হয়নি। আমি শিক্ষকদের কাছ থেকে জানতে চেয়েছিলাম তারা জানিয়েছেন তারা উপর থেকে কোনো নির্দেশনা পায়নি। এই বিষয়ে জানতেন ও না তাই পালন করেননি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক বলেন, করোনার কারণে আমরা সংক্ষিপ্তভাবে পালন করেছি। অনুষ্ঠান পালনের কোনো ছবি আছে কি না জানতে চাইলে তিনি কোনো উত্তর দেননি।
বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক সমিতির আনোয়ারা উপজেলা শাখার সভাপতি ও বিলপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কে এম ছরোয়ার হোসাইন পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উদযাপন বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী বিদ্যালয়ে যথাযথ মর্যাদায় পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করেছি।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো: বেলাল হোসেন বলেন, প্রথম বারের মতো পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উদযাপনের চিঠি আমরা প্রতিটি স্কুলে পৌঁছে দিয়েছি। কোন কোন স্কুল ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উদযাপন করেনি তার তথ্য এই মুহূর্তে আমার কাছে নেই । কোন অভিযোগ ও পায়নি। তিনি এই প্রতিবেদককে সংবাদটি প্রকাশ না করতেও অনুরোধ জানান।