বিশেষ প্রতিনিধি: ভারত-বাংলাদেশ বর্ডার সপ্তাহে সাতদিন ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত সরকার।
এর ফলে বেনাপোল-পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে দুই দেশের নাগরিকদের মধ্যে যাত্রী পারাপার ও পণ্য পরিসেবা ২৪ ঘণ্টাই চালু থাকবে। ইতোমধ্যে দুপারেই এ নিয়ে তোড়জোড় শুরু হয়েছে।
ভারত-বাংলাদেশ ল্যান্ডপোর্ট ইমপোর্ট এক্সপোর্ট কমিটির চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান বলেন, এর আগে গত ৩১ অগাস্ট এ বিষয়ে দিল্লিতে বৈঠক হয়, তারপরই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের ল্যান্ড পোর্ট অথরিটির ডিরেক্টর অজিত কুমার সিং (অপারেশন) ২৫ অক্টোবর এই সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করেছেন। ওই নির্দেশনা অবিলম্বে কার্যকর করার জন্য কাস্টমস ও ইমিগ্রেশন দপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
আপাতত পরীক্ষামূলকভাবে তিন মাসের জন্য নতুন এই নিয়ম চালু করা হবে। সফল হলে পরবর্তীকালে সেটি স্থায়ীভাবে চালু রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। নতুন এই ব্যবস্থা এখন শুধুমাত্র কার্যকর হওয়া সময়ের অপেক্ষায়।
দুই দেশের বন্দর ব্যবহারকারীরা বলছেন, গত ২৪ ঘণ্টা বন্দরের কার্যক্রম সচলে যেমন আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে গতি ফিরবে তেমনি ভ্রমণে সুবিধা পাবেন ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে যাতায়াতকারী পাসপোর্ট যাত্রীরা।
ব্যবসায়ী নেতা হিসাবে ২৪ ঘণ্টা বন্দর চালুর সিদ্ধান্তের বিষয়ে তিনি ভারত থেকে একটি চিঠি পেয়েছেন বলে জানান মতিয়ার রহমান।
বেনাপোল আমদানি রপ্তানিকারক সমিতির সহ-সভাপতি আমিনুল হক জানান, বাণিজ্য আর চিকিৎসা সেবা নিতে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে প্রচুর যাত্রী যাতায়াত করে থাকে। বর্তমানে সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত যাত্রী পরিসেবা চালু রয়েছে ইমিগ্রেশনে। এ সময়ের বাইরে কোনো যাত্রীর সীমান্ত পার হওয়ার যতই প্রয়োজন থাকুক না কেন নির্দিষ্ট সময়ের পর ইমিগ্রেশন দপ্তর খোলা না হওয়া অবদি তাদের আটকে পড়তে হতো বর্ডারে। ফলে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসায়ীদের দাবি ছিল বন্দর ২৪ ঘণ্টা সচল রাখার।
পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্ট স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী জানান, আপাতত পরীক্ষামূলক তিন মাস চলবে এ কার্যক্রম। ভাল সাড়া পেলে সেটি দীর্ঘস্থায়ী করা হবে।
যাত্রী পরিসেবা ২৪ ঘণ্টার জন্য চালু হলে দুই দেশের নাগরিকদের হয়রানি কমবে বলে মত প্রকাশ করেন তিনি।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন বলেন, বর্তমানে বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দরের মধ্যে সপ্তাহে ৬ দিন আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এছাড়া সরকারি ছুটির দিনও বাণিজ্য বন্ধ থাকে। সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘণ্টা আমদানি-রপ্তানি চালু হলে হলে বাণিজ্যে গতি ফিরবে। এতে সরকারেরও রাজস্ব আয় বাড়বে। এমন সিদ্ধান্তে উপকৃত হবে দুই দেশের মানুষ।