নীলফামারী প্রতিনিধি: বিয়ের দাবীতে বিজিবি সদস্যের বাড়িতে দিনভর অবস্থান করেছে সৈয়দপুর সরকারী কলেজের স্নাতক প্রথম বর্ষের এক ছাত্রী।
আজ বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি) এই ঘটনা ঘটেছে সৈয়দপুর উপজেলার পশ্চিম সীমান্তে নীলফামারী সদর উপজেলার সোনারায় ইউনিয়নের ছোট বেড়াকুঠি গ্রামে।
অবস্থানকালে শত শত কৌতুহলী মানুষ ঘটনাস্থলে ভীড় জমান। বিষয়টি সহসাই চাউর হয়ে পড়লে এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
অবস্থানকারী কলেজ ছাত্রী জানান, সে সৈয়দপুর শহরের কয়ানিজপাড়ার মেয়ে। ছোট বেড়াকুঠি গ্রামের দুলাল হোসেন ও মোর্শেদা দম্পতীর বড় ছেলে বিজিবি সদস্য আরিফ হোসেনের সাথে মোবাইলের মাধ্যমে পরিচয়।বিগত ২০১৭ সাল থেকে এই পরিচয়ের সূত্র ধরে তাদের মাঝে গভীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
এক পর্যায়ে আরিফ বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে বাসা ভাড়া নিয়ে একসাথে বসবাস করে দীর্ঘ দিন দেহ ভোগ করেছে। বিজিবি তে চাকুরী হওয়ার পরও সে ছুটি নিয়ে এসে আমার সাথে ভাড়া বাসায় থেকেছে।
গত ২৮ ডিসেম্বর আমাকে একাকী ফেলে রেখে পালিয়েছে। কারণ সেদিন থেকে তার ব্যবহৃত মোবইল ফোনটি বন্ধ। তাছাড়া সে সব ধরণের যোগাযোগও বন্ধ রেখেছে। এমতাবস্থায় খবর পাই সে পরিবারের দোহাই দিয়ে অন্যত্র বিয়ে করতে যাচ্ছে। যৌতুক না দেয়ায় সম্পর্ক অস্বীকার করে এমন প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছে সে। একারনে তাকে ধরতে এবং বিচারের আশায় এমন পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়েছি। কারণ ইতোপূর্বে গত ৩১ ডিসেম্বর ন্যায় বিচার পাওয়ার আশায় আমাদের সম্পর্কের নানা প্রমাণাদি সহ আরিফের বাবা মা বড় ভাই, স্থানীয় মেম্বার ও ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছে এসেও তাদের কোন সহযোগীতা পাইনি। বরং তারা উল্টো ৮/১০ লাখ টাকা যৌতুক দাবী করে এই সম্পর্ক মেনে নিতে। নয়তো ছেলেকে যেখানে বিয়ে ঠিক হয়েছে সেখানেই বিয়ে দিবেন।
আমার বাবা সামান্য একজন চা বিক্রেতা। আমার পক্ষে তাদের যৌতুকের চাহিদা মেটানো সম্ভব নয়। টাকা নিয়েই যদি বিয়ে করবে তাহলে আমার পরিবারের অবস্থা বিষয়ে সব জেনেও কেন সে আমার জীবনটা নষ্ট করলো? আমি এর বিচার চাই। মেয়েটি আরও জানায়, দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কারও সহযোগীতা না পেয়ে অবশেষে গত ১০ জানুয়ারি সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেও কোন সুরাহা পাইনি। তাই নিরুপায় হয়ে এপথ অবলম্ব করেছি। এতেও যদি বিচার না পাই তাহলে আত্মহত্যা করা ছাড়া আর কোন উপায় থাকবেনা। এই পরিস্থিতিতে স্থানীয় মেম্বার ও ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোঃ ফিরোজ আলম বুলু ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে এব্যাপারে সুরাহার আশ্বাস দেন এবং এর আগে কোনভাবেই অন্যত্র বিয়ে হবেনা বলে দায়িত্ব নেন। এতে মেয়েটি উপস্থিত মিডিয়াকর্মী ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের স্বাক্ষী রেখে মেম্বারের কথা বিশ্বাস করে দিন শেষে বাড়ি ফিরে যায়। এসময় সে বলে এই কথার ব্যত্যয় ঘটলে আমার যেকোন পরিণতির জন্য আরিফ, তার পরিবার ও মেম্বার দায়ী থাকবেন।