বিশেষ প্রতিনিধি: ১৫ হাজার টাকা গাড়িভাড়া দিয়ে এসেও ৮ মিনিট দেরি হওয়ায় মেরিট লিস্টে প্রথম স্থানে থেকেও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারলো না নিপুণ বিশ্বাস…..
স্মার্টফোন না থাকায় অনলাইনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির নোটিশ দেখতে পায়নি। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পায়নি কোনো এসএমএস। যখন অন্যের মাধ্যমে জানতে পারলো, তখন সময় বেশি বাকি নেই। তড়িঘড়ি করে এক নিকটাত্মীয়ের কাছ থেকে টাকা ধার করে ১৫ হাজার টাকা চুক্তিতে মাইক্রোবাস ঠিক করে। তবু নির্ধারিত সময়ের ভেতর বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছাতে না পারায় ভর্তি হতে পারল না নিপুণ বিশ্বাস। মাত্র ৮ মিনিট দেরি হয়েছিল তার। নীলফামারি সদর উপজেলার লক্ষ্মীচাপ ইউনিয়নের এই তরুণ এবার যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) ভর্তির সুযোগ পেয়েছিল। তবে দীর্ঘ সড়কপথ পাড়ি দিয়ে নীলফামারি থেকে যশোরে পৌঁছাতে না পারায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া হয়নি তার।
সংবাদ মাধ্যমে সে জানিয়েছে, গত পরশু রোববার (৩০শে জানুয়ারি) সাড়ে ৫ টার দিকে যবিপ্রবির ওয়েবসাইটের নোটিশে ৩য় ভর্তি বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। আমার কোনো স্মার্ট ফোন না থাকায় এই ভর্তি বিজ্ঞপ্তি দেখতে পারিনি। তাছাড়া যবিপ্রবি থেকে আমার মোবাইল নম্বরে ভর্তির জন্য কোনো কল বা মেসেজ দেয়ার কথা থাকলেও সেটাও দেয়া হয়নি। মাঝরাতে আমার একজন বড়ভাই আমাকে ফোন করে ভর্তির বিষয় জানালে আমি তাৎক্ষনিক প্রতিবেশী ও স্বজনদের কাছ থেকে ২৩ হাজার টাকা জোগাড় করি । ঐ রাতেই নির্দিষ্ট সময়ে আসার জন্য ১৫ হাজার টাকায় রিজার্ভে একটি প্রাইভেট মাইক্রোবাসে যবিপ্রবির উদ্দেশে রওনা দেই। কিন্তু যশোর থেকে নীলফামারীর দূরত্ব অনেক বেশি হওয়ায় এবং রাস্তার অবস্থা খারাপ হওয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছাতে আমার বেলা ১২টা ৮ মিনিট বাজে। এরমধ্যে ১০ টার দিকে আমার বিষয়ে একজন বড় ভাই ডিন স্যারের সাথে এই সমস্যার বিষয়ে কথা বলেন। কিন্তু আমি আসার পরে জানতে পারি মেরিট লিস্টে আমি প্রথমে থাকার পরেও তৃতীয় সিরিয়ালে থাকা শিক্ষার্থীকে ভর্তি নেয়া হয়েছে। এরপর আমি অনেক অনুনয়-বিনয় করলেও তারা আমাকে ভর্তি নেয়নি। এমনকি বিভাগীয় চেয়ারম্যানের কক্ষের সামনে গেলেও চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলতে দেয়নি। তিনি আরও বলেন, মধ্যরাতে প্রতিবেশীদের কাছ থেকে এতোগুলো টাকা ধার করে নিয়ে আমার পরিবার ভর্তির জন্য পাঠালো। আমি এখানে এসে ভর্তি হতে পারলাম না। আমি আমার পরিবারকে কি জবাব দিব? যদি সময়সীমা বাড়ানো হতো তাহলে আমি সঠিক সময়ে উপস্থিত হতে পারতাম। তাছাড়া আমাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে কোনো মেসেজ দেয়া হয়নি। অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ওয়েটিং লিস্টে থাকায় আমি মেসেজ পেয়েছি, কিন্তু এখানকার প্রশাসন কোনো মেসেজ দেয়নি। আমাকে যদি আগে থেকে মেসেজ দেয়া হতো অথবা নোটিশের পরের দিনই সময় না দিয়ে একটা দিন পরে দেয়া হতো তাহলে আমি সঠিক সময়ে এসে ভর্তি হতে পারতাম।”
আমি মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর জরুরি দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, যেহেতু এখানে নিপুণ বিশ্বাসের কোন ভুল বা গাফিলতি নেই, মানবিক কারণে তাকে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ দেওয়া হোক। কারো স্বপ্ন বা আশা এভাবে ভেঙে দিবেন না সচেতন মহলের দাবি।