নিজস্ব প্রতিবেদন: আমি যখন ১৯৯৬ সালের আগে বিরোধী দলে থাকা অবস্থায় রাজপথের প্রতিটি মিছিলের সাথী হয়ছি-
তখন তুমি ব্যস্ত ছিলে নিজেকে নিয়ে। আমি থাকতাম রাজপথে, তুমি থাকতে ঘরের কোণে পড়ার টেবিলে। যদিও তোমার চেয়ে পরীক্ষার রেজাল্ট সেই সময় আমার অনেক ভালো ছিল। তুমি পড়তে নামিদামি মাস্টার মশাইদের কাছে টিউশনি, আর আমি পড়তাম বেশি নামকরা না হলেও তখনকার দিনের একটি কোচিং সেন্টারে, সেটি হল কপোতক্ষ কোচিং সেন্টার কুমিরা বাজারে, সেই সময়কার মোটামুটি নাম ডাক ছিল। তখনকার দিনের আমার শিক্ষাগুরুরা ছিলেন নবকুমার দাদা, উদয়ন বিট (লালু) দাদা, মুকুন্দ কৃষ্ণ দাদা, প্রবীর দাদা, আরো যে দুটি জায়গায় পড়তাম একজন ছিলেন প্রবীর দাদা, অন্যজন ছিলেন জয়ন্ত কাকু এনারা ছিলেন তখনকার দিনের আমার শিক্ষাগুরু অপপটে স্বীকার করি। তাদের কথা আজও ভুলতে পারেনি এবং কোনদিন ভুলতেও পারবো না। শুধু শিক্ষাগুরু না এনাদের ভিতরে অনেকেই ছিলেন তখনকার দিনের ছাত্র রাজনীতির অর্থাৎ ছাত্রলীগের আমার পথ চলার দিশারী, আমার ছাত্র রাজনীতির অনুপ্রণা।
আমি যখন প্রতিটি হরতাল সফল করার জন্য জীবন বাজী রেখে রাজপথে গেরিলা প্রোগ্রাম করি-তুমি তখন প্রেমিকার সাথে প্রেমে মশগুল হয়ে বসে থাকতে।
আমি যখন পরের দিন হরতাল সফল করার জন্য যাযাবরের মতো বিভিন্ন জায়গায় রাত্রীযাপনের প্রস্তুতি নিই,
তুমি তখন টিভির এন্টেনা ঠিক করতে রাতে মজার মজার নাটক দেখবে বলে।
৯৬ দশকের আগে আমি যখন ছাত্রলীগের কোন এক ছোট ইউনিটের কর্মী হিসেবে কাজ করছি তখন তুমি ব্যস্ত নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে।
আমি যখন বিএনপি, ছাত্রদল ও জামাত-শিবিরের নেতাকর্মীদের তাড়া খেতে খেতে জর্জরিত- তখন তুমি হলিউডের অ্যাকশান ছবি দেখতে ব্যস্ত। আর আজ যখন আমার প্রিয় দল বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ টানা ৩ বারের মতো ক্ষমতায়—
তখন আমি আজ নিজের রিজিক খুঁজে বেড়াই সারাদিন সারাটি সময় সারাটি মাস সারাটি বছর –
অথবা ছোটখাটো একটা বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের ৪নং কুমিরা ইউনিয়ন কমিটির তথ্য ও গবেষণা সম্পাদকের রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বুকে ধারণ করে পথ চলি। তখন তুমি আজ নিজেকে আওয়ামীলীগের বড় নেতার পরিচয় দিয়ে চলো তুমি নিজের পথে, কারণ তোমার অনেক টাকা আছে অথবা বড় কোন আওয়ামীলীগের আত্মীয়ের পরিচয় আছে তাই।
আমি আজ হাইব্রীড লোকে বলে যাহারা ৯৬ দশকের আগে আমাকে রাজপথে দেখিনি। আর আজ তুমি হচ্ছো সর্বোচ্চ ডেডিকেটেড। তাহাতে আমার বিন্দুমাত্র দুঃখ নাই, কারণ আমি আওয়ামীলীগ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছি, আমার রক্তে আওয়ামীলীগ। তাই বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে ধারণ করে জন্ম লগ্ন থেকে ছাত্রলীগ, সৈনিক লীগ করেছি। আর এখন আওয়ামীলীগ করছি, আর যতদিন বেঁচে থাকব আওয়ামীলীগ করে যাব। তাতে যদি আমার কোথাও কোনোদিনের জন্যেও পদ পদবী নাও থাকে তাতে আমার কোন দুঃখ নেই থাকবে না। শুধুমাত্র একজন মুজিব আদর্শের আওয়ামীলীগের ক্ষুদ্র কর্মী হিসেবে আওয়ামীলীগকে সারা জীবন ভালোবেসে যাবো এবং আওয়ামীলীগকেই ভোট দিয়ে যাব যতদিন বেঁচে থাকব। এই ছাড়া আমার জীবনে আর কিছু চাওয়ার নেই আমার প্রাণপ্রিয় বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া এবং আদর্শের দল বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কাছে।
একজন ক্ষুদ্র রাজনৈতিক কর্মীর মনের কষ্টের কথাগুলো তুলে ধরা শুধুমাত্র এই ছাড়া আর কিছু না। এরকম হাজারো অজানা নাম না জানা রাজনৈতিক কর্মীর মনের কষ্টের কথাগুলো লুকিয়ে আছে আঁধারে কে বা কারা খোঁজ রাখে এদের মত ত্যাগী কর্মীদের কথা।
কলমে:- বাসুদেব দাশ।