মাসুদ আলম চয়ন,মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: করোনার প্রাদূর্ভাব বাড়ার পর থেকে মৃত্যু ও আক্রান্তের হার বাড়তে থাকায় দেশে চলছে সর্বাত্মক লকডাউন। ফলে সরকারি-বেসরকারি অফিস,ব্যবসা প্রতষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। প্রান্তিক জনগোষ্টির আয়ের অন্যতম মাধ্যম ছোট ছোট দোকান ও রিকসা-সিএনজিসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় রোজগার বন্ধ হয়ে গেছে অনেক মানুষের।
সরকারি নির্দেশনা হলো মাঠ পর্যায়ে বিভিন্ন এনজিওর কিস্তি আদায় না করা। কিন্তু এ নির্দেশ মানেনি দেশের অধিকাংশ এনজিও এবং “পল্লী ও ক্ষুদ্র ঋণ” পরিচালনাকারি ব্যাংক গুলো। সরকারের নির্দেশ অমান্য করে দেশব্যাপী কিস্তি আদায়ে মাঠে আছেন প্রতিষ্ঠান গুলোর কর্মকর্তারা। এমন পরিস্থিতিতে ঋণের কিস্তি দিতে হিমশিম খাচ্ছেন নিম্ন আয়ের ঋণগ্রহীতারা। এ ছাড়াও অনেকে এনজিও থেকে সাপ্তাহিক কিস্তিতে ঋণ নিয়ে ইজিবাইক, অটোরিকশাসহ বিভিন্ন যানবাহন চালিয়ে, চা-পানের দোকান থেকে আয় করে জীবিকা নির্বাহ করেন ও ঋণের কিস্তি শোধ করেন।
লকডাউনে যেখানে দু’বেলা দু’মুঠো আহার যোগাতে হিমশিম খাচ্ছেন তারা। এরই মধ্যে ‘মরার ওপর খাঁড়ার ঘা’ হয়ে দাঁড়িয়েছে কিস্তি। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন আর্থিক সংকট আর চরম দুর্দশায় পড়া দেশের কর্মহীন, মধ্যবিত্ত আর নিম্নআয়ের ঋণগ্রহীতারা। সৃষ্ট পরিস্থিতিতে দিশেহারা হয়ে উঠেছেন ঋণগ্রহীতাদের পরিবারগুলো।
ঋণগ্রহীতাদের অভিযোগ, করোনাভাইরাসের প্রভাবে চরম হুমকির মুখে দাঁড়িয়েছে তাদের জীবনযাপন। সংক্রমণ এড়াতে সরকারের দেয়া স্বাস্থ্যবিধি আর বিধিনিষেধ মেনে সংসার চালাতেই যেখানে হিমশিম খাচ্ছেন তারা। এরই মধ্যে ‘মরার ওপর খাঁড়ার ঘা’ হয়ে দাঁড়িয়েছে এনজিও’র কিস্তি আদায় কার্যক্রম। কিস্তির টাকা আদায়ের জন্য বাড়ি বাড়ি গিয়ে আর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হানা দিচ্ছেন এনজিও ও ব্যাংক কর্মীরা। কারো কারো মোবাইলেই কিস্তি পরিশোধের জন্য চাপ প্রয়োগ করছেন তারা। এতে চরম বেকায়দায় রয়েছেন ওই ঋণগ্রহীতারা।
এনজিও প্রতিষ্ঠান ব্রাক মৌলভীবাজার অফিসের লোক ৫/০৭/২০২১ ইং তারিখে দেখা যায় মৌলভীবাজার সদর উপজেলার ৭ নং চাঁদনীঘাট ইউনিয়নের বর্ষিজোড়া গ্রামের কিস্তি আদায়ের জন্য বাড়ি বাড়ি গিয়ে ঋন-গ্রহীতাদের কিস্তি আদায়ের জন্য চাপ সৃষ্টি করছে।ঋন – গ্রহীতা রিতা বেগম (৩৫) খুশবা বেগম (৪০) তারা জানান তাদের স্বামী ও ছেলেরা আয় রোজগার না থাকাতে বর্তমানে তাদের সন্তানাদিদের নিয়ে দু -বেলা খেতে ও তাদের রীতিমতো সংগ্রাম করতে হচ্ছে, তারপরও কিস্তির স্যাররা এসে বিভিন্ন ভাবে কিস্তি আদায়ের জন্য চাপ প্রয়োগ করতেছে,অপর দিকে মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার শমসেরনগর ইউনিয়নের দেউরাছড়া চা- বাগানে ও এনজিও সমিতি ব্রাকের মাঠ কর্মী শিপ্রা সরকারকে ঋন-গ্রহীতাদের কাছ থেকে কিস্তি আদায় করতে দেখা গেছে।এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন কিস্তি আদায় না করলে অফিস থেকে বেতন দেওয়া হয় না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ঋন- গ্রহীতা জানান কিস্তি পরিশোধ না করলে পরবর্তীতে ঋন দেওয়া হবে না বলে হুশিয়ারি করা হচ্ছে।
এ দিকে ইসলামি ব্যাংক কর্তৃক পরিচালিত এনজিও পল্লী উন্নয়ন সংস্থা কর্তৃক ও গ্রাহককে হয়রানির খবর পাওয়া যায়।পল্লী উন্নয়ন প্রকল্পের বর্ষিজোড়া গ্রামের রাহেলা বেগম (৩৬) ঋন- গ্রহীতা জানান কিস্তি নেওয়ার জন্য ব্যাংকের পক্ষ থেকে (৪ জুলাই রবিবার বিকালে) ফোন করা হয়, সকলের কিস্তি রেডি রাখার জন্য।লক-ডাউনে ও কিস্তি বন্ধ নেই যারা দূর্যোগের সময় ও লাভের বা মুনাফার জন্য সাধারণ মানুষকে নাজেহাল করছে তাদের আইনের আওতায় আনা প্রয়োজন।এজন্য স্হানীয় প্রশাসনকে ও এগিয়ে আসা প্রয়োজন। গ্রাহকরা এটাকে অমানবিক আচরণ হিসাবে দেখছে।