পটুয়াখালী প্রতিনিধি: বঙ্গোপসাগরে জেলেদের জালে ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে রুপালী ইলিশ। প্রতিদিন শত শত মাছধরা ট্রলার রুপালি ইলিশ নিয়ে তীরে ফিরে আসছে। মহিপুর, আলীপুর ও কুয়াকাটাসহ উপকূলীয় এলাকার মৎস্য বন্দর গুলোতেও ইলিশের ঝমঝমাট বেচাকেনা চলছে। বেড়েছে কর্মব্যাস্ততা। কুয়াকাটা ও মৎস্য বন্দর আলিপুর,মহিপুরে প্রায় দুই শতাধিক আড়ৎ রয়েছে।
এসব আড়তে প্রতি দিন প্রায় হাজার মেট্টিক টন মাছ বেচাকেনা হচ্ছে। দামও এখন হাতের নাগালে। বঙ্গোপসাগরে ইলিশ ধরা পড়ায় জেলেদের মুখে যেমন হাসি ফুটেছে তেমন সাধারন মানুষও কম দামে ইলিশের স্বাদ গ্রহন করতে পারছেন। ৬৫ দিনের অবরোধ শেষে জেলেরা সমুদ্রে মাছ শিকারে গেলেও কাঙ্খিত ইলিশের দেখা মেলেনি। দক্ষিণ পূর্ব বঙ্গোপসাগরে ইলিশ ধরা পড়লেও উত্তর পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে ইলিশের আকাল চলছিল। গত বৃহস্পতিবার থেকে দীর্ঘ খড়া কাটিয়ে জেলেদের জালে ধরা পড়া শুরু করেছে ইলিশ।
গত রবিবার সকালে মৎস্য বন্দর আলিপুর-মহিপুর ঘুরে দেখা গেছে, নিজাম মাঝি দু’শ মন ইলিশ নিয়ে বন্দরে ফিরে এসেছে। তিনি ফয়সাল ফিস নামে মৎস্য আড়তে ওই মাছ ৩৫লাখ টাকায় বিক্রি করেছে। নোয়াখালী থেকে কুয়াকাটা সংলগ্ন সাগরে ইলিশ ধরতে এসেছেন আযাদ মাঝি। তার এফবি মায়ের দোয়া ট্রলারে সে ১২০ মন ইলিশ পেয়েছেন।
মেসার্স আল্লাহ ভরসা মৎস্য আড়তে সে ওই মাছ ২২ লাখ টাকায় বিক্রি করেছেন। এফবি কামাল ট্রলারের রাব্বি মাঝি মাছ পেয়েছেন ৮০ মন। মৎস্য বন্দর মহিপুরের মেসার্স আকন মৎস্য আড়তে সে ওই মাছ ১৭ লাখ টাকায় বিক্রি করেছেন। রাব্বি মাঝি চট্রগ্রাম থেকে কুয়াকাটা সংলগ্ন সাগরে ইলিশ ধরতে এসেছেন। এভাবে প্রত্যেকটি মাছ ধরা ট্রলারে ইলিশ ধরা পড়ায় খুশি জেলেসহ মৎস্যজীবিরা।
জেলেদের এসব আহরিত ইলিশ খোলা বাজারে প্রকারভেদে ১২ হাজার থেকে ২৫ হাজার টাকা মন বিক্রি হচ্ছে। ইলিশ কারবারিরা এসব ইলিশ কিনে ট্রাক,পিক-আপ ও পরিবহন যোগে দেশের বিভিন্ন স্থানে বাজারজাত করা হচ্ছে। বড় সাইজের ইলিশ দেশের বাহিরে রপ্তানিও করা হচ্ছে।
মহিপুর বন্দরের মেসার্স আল্লাহ ভরসা মৎস্য আড়তের মালিক লুনা আকন সাংবাদিকদের জানান, বর্তমান বাজারে এক কেজির নিচে এবং ৮শ গ্রামের উপরের সাইজের মাছের দর ২৩ হাজার ৫শত টাকা মন, ৫শ গ্রামের উপরের মাছ ১৭ হাজার টাকা এবং ৫শ গ্রামের নিচের মাছ ১৪ হাজার টাকা মন দরে বিক্রি হচ্ছে।
আলিপুর- কুয়াকাটা মৎস্য আড়ৎ সমবায় সমিতির সভাপতি দিদার উদ্দিন মাসুম বেপারী বলেন, গত চারদিন ধরে সাগরে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। দামও আগের তুলনায় কিছুটা কম। আলীপুর-কুয়াকাটা মৎস্য আড়ৎ সমবায় সমিতির সভাপতি আনছার উদ্দিন মোল্লা বলেন, ৪/৫ দিনে শতকরা ৫০ ভাগ জেলেদের জালে ভালো ইলিশ ধরা পড়েছে। এভাবে ১৫ দিন মাছ ধরা পড়লে জেলেরা ক্ষতি পুষিয়ে লাভের মুখ দেখবে।