বিশেষ প্রতিনিধি: দুর্গাপুজা হলো দেবী দুর্গার পুজা কে কেন্দ্র করে হিন্দু ধর্মালম্বীদের সব থেকে বড় ধর্মীয় উৎসব। এটি সাধারনত আশ্বিন মাসের শুক্লা পক্ষ থেকে শুরু হয়। শারদীয়া দুর্গাপুজাকে অকালবোধন বলা হয়। হিন্দু শাস্ত্রানুসারে শরৎকালে দেবতারা ঘুমিয়ে থাকেন। তাই এই সময়টি তাঁদের পূজার যথাযথ সময় নয় তাই এই পূজার নাম অকালবোধন।
কালিকা ও বৃহদ্ধর্ম পূরাণ অনুসারে রাম ও রাবনের যুদ্ধের সময় শরৎকালে দুর্গাকে পূজা করা হয়েছিলো। আবার বলা হয় রামকে সাহায্য করার জন্য ব্রহ্মা নিজেই এই পূজা করেছিলেন। কৃত্তিবাস ওঝা তার রামায়নে লিখেছেন স্বয়ং রাম দূর্গা বোধন ও পূজা করেছিলেন।
দুর্গাপুজা সাধারনত আশ্বিন মাসের শুক্লা পক্ষের ষষ্ঠ দিন থেকে শুরু হয়ে দশম দিন পর্যন্ত মোট এই পাঁচটি দিন অনুষ্ঠিত হয়। এই পাঁচটি দিন যথাক্রমে ষষ্টী, মহাসপ্তমী, মহাষ্টমী, মহানবমী ও বিজয়া দশমী নামে পরিচিত।
দুর্গাপুজার বিশেষ অনুষ্টানগুলোর মধ্যে একটি হলো মহাস্নান। মহা সপ্তমীর দিন নব পত্রিকা স্নানের পর মহাস্নান অনুষ্টিত হয়। দুর্গা প্রতিমার সামনে একটি দর্পণ রেখে সেই দর্পণে প্রতিফলিত প্রতিমার প্রতিবিম্বে বিভিন্ন জিনিস দিয়ে দুর্গাকে স্নান করানো হয়। মহাস্নানের সময় শুদ্ধজল, নদীর জল, শঙ্খজল, গঙ্গাজল, উষ্ণ জল, সুগন্ধি জল, পঞ্চগব্য, কুশ ঘাসের দ্বারা ছেটানো জল, ফুলে দ্বারা ছেটানো জল, ফলের জল, মধু, দুধ, নারকেলের জল, আখের রস, তিলের তেল, বিষ্ণু তেল, শিশিরের জল, রাজদ্বারের মাটি, চৌমাথার মাটি, বৃষশৃঙ্গমৃত্তিকা, গজদন্তমৃত্তিকা, নদীর দুই তীরের মাটি, গঙ্গামাটি, সব তীর্থের মাটি, সাগরের জল, ঔষধি মেশানো জল, বৃষ্টিজল, সরস্বতী নদীর জল, পদ্মের রেণু মেশানো জল, ঝরনার জল ইত্যাদি দিয়ে দুর্গাকে স্নান করানো হয়।
মহিষাসুর কে বলা হয় অসুর যার অর্থ দেবদ্রোহী। তাই দেবদ্রোহী বধের মাধ্যমে সু এবং কু প্রথার চিরকালীন দ্বন্দ্বে অশুভ শক্তির উপর শুভ শক্তির বিজয়ের প্রতীক এই দেবী প্রতিমা।