নিজস্ব প্রতিবেদন: সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব শ্রী শ্রী শ্যামা পূজা (কালী পূজা) অনুষ্ঠিত হবে আজ বৃহস্পতিবার। কার্তিক মাসের অমবস্যা তিথিতে সাধারণত এ পূজা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। ১৮ শতকে নবদ্বীপের রাজা কৃষ্ণচন্দ্র এই পুজা শুরু করেন| এর পর ১৯ শতক থেকে এই পুজো বহুল প্রচলিত হয়| সবার কাছে এই পুজা শব্দবাজি এবং আলোর রোশনাইয়ের পুজো।
হিন্দু পুরাণ মতে, দেবী কালী দুর্গারই একটি শক্তি। সংস্কৃত ভাষার ‘কাল’ শব্দ থেকে কালী নামের উৎপত্তি। কালী পূজা হচ্ছে শক্তির পূজা। জগতের সকল অশুভ শক্তিকে পরাজিত করে শুভশক্তির বিজয়ের মধ্যেই রয়েছে কালীপূজার মাহাত্না।
দেবী কালী তার ভক্তদের কাছে শ্যামা, আদ্য মা, তারা মা, চামুন্ডি, ভদ্রকালী, দেবী মহামায়া ইত্যাদি নামে পরিচিত।
কালী পূজার দিন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা সন্ধ্যায় তাদের বাড়িতে ও শ্মশানে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করে পরলোকগত পিতা-মাতা ও আত্মীয়-স্বজনদের স্মরণ করেন। এটিকে বলা হয় দীপাবলি।
দুর্গাপূজার মতো কালীপূজাতেও গৃহে বা মণ্ডপে মৃন্মময়ী প্রতিমা নির্মাণ করে পূজা করা হয়। মন্দিরে বা গৃহে প্রতিষ্ঠিত প্রস্তরময়ী বা ধাতুপ্রতিমাতেও কালীপূজা করা হয়। মধ্যরাত্রে মন্ত্রোচ্চারণের মাধ্যমে পূজা অনুষ্ঠিত হয়। দেবীকে ছিন্নমস্তকসহ বলির পশুর রক্ত, মিষ্টান্ন, অন্ন, লুচি, ফল-ফলাদি উৎসর্গ করা হয়।
তবে গৃহস্থ বাড়িতে সাধারণত ব্রাহ্মণ্যমতে আদ্যাশক্তি কালীর রূপে কালীর পূজা অনুষ্ঠিত হয়। লোকবিশ্বাস অনুযায়ী, মা কালী শ্মশানের অধিষ্ঠাত্রী দেবী। এই কারণে বিভিন্ন অঞ্চলে শ্মশানে মহাধুমধামসহ শ্মশানকালী পূজাও অনুষ্ঠিত হয়।
কালী পুজা অত্যন্ত নিষ্ঠা ও সঠিক বিধি মেনে করা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। সাধারণত ধ্যান, দেবীর আবাহন, পুষ্পাঞ্জলি দ্বারা এই পুজোর বিধি সম্পন্ন হয়।
রাজধানীর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির, রাম কৃষ্ণ মিশন ও মঠ , সিদ্দেশরী কালী মন্দির, সবুজবাগ থানাধীন শ্রী শ্রী বরদেশ্বরী কালীমাতা মন্দির, পুরান ঢাকার ঐতিহাসিক ৮৪নং বনগ্রাম রোডস্থ রাধাগোবিন্দ জিঁও ঠাকুর মন্দির, পোস্তাগোলা মহাশ্মশান, রামকৃষ্ণ মিশন, ঢাকেশ্বরী বাড়ী, সূত্রাপুরের বিহারীলাল জিঁও মন্দির, গৌতম মন্দির, রামসীতা মন্দির, ঠাঁটারী বাজারে শিব মন্দির, তাঁতী বাজার, শাঁখারী বাজার, বাংলা বাজারসহ বিভিন্ন মণ্ডপ ও মন্দিরে শ্যামা পূজা অনুষ্ঠিত হবে।